Saturday, May 23, 2015

রোযার মাসায়েল-২




আস সালামুয়ালাইকুম, আলহামদুলিল্লাহ,ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রসুলিল্লাহ।
-
রোযার মাসায়েল-২
--
প্রশ্ন: রেস্টুরেন্ট মালিকের জন্য রমজানের দিনের বেলায় বে-রোজদার লোক ও অমুসলিমদের নিকট খাবার বিক্রি করা জায়েয কি?
________________________________________
উত্তর: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
জেনে রাখুন, রমজান মাসের দিনের বেলায় কাউকে খাবার খেতে দেয়া আপনার জন্য জায়েয নয়। তবে সে ব্যক্তির রোজা-ভঙ্গ করার শরিয়তসম্মত কোন ওজর থাকলে; যেমন অসুস্থ হলে বা মুসাফির হলে ভিন্ন কথা। এই হুকুমের ক্ষেত্রে মুসলিম ও কাফেরের মাঝে কোন তফাৎ নেই।
বে-রোজদার মুসলিম রোযার রাখার জন্য আদিষ্ট। রোজা ভঙ্গ করার কারণে সে গুনাহগার হবে। রমজান মাসের দিনের বেলায় তাকে পানাহার করতে দেয়ার মানে গুনাহ ও সীমালঙ্ঘনের কাজে তাকে সহযোগিতা করা। অনুরূপভাবে কাফের ব্যক্তিও সিয়াম পালন ও সমস্ত ইসলামী অনুশাসন পালন করার ব্যাপারে আদিষ্ট। তবে আমলের আগে তাকে দুই সাক্ষ্যবাণী (শাহাদা) উচ্চারণ করে ইসলামে প্রবেশ করতে হবে। কেয়ামতের দিন কাফেরকে তার কুফুরির কারণে যেমন শাস্তি দেয়া হবে তেমনিভাবে ইসলামী শরিয়তের অন্যান্য অনুশাসনগুলো পালন না করার কারণেও শাস্তি দেয়া হবে। এতে করে জাহান্নামে তার শাস্তি অনেক বেড়ে যাবে।
একজন মুমিন যা যা করার জন্য আদিষ্ট একজন কাফেরও তা তা করার জন্য আদিষ্ট। তবে দুনিয়াতে কাফেরকে বাধ্য করা হচ্ছে না। কাফের যে, শরয়ি বিধিবিধান পালনের জন্য আদিষ্ট এর দলীল হচ্ছে- আল্লাহ তাআলার বাণী:
কিন্তু ডানদিকস্থরা, তারা থাকবে জান্নাতে এবং পরস্পরে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। অপরাধীদের সম্পর্কে বলবেঃ তোমাদেরকে কিসে জাহান্নামে নীত করেছে? তারা বলবেঃ আমরা নামায পড়তাম না, অভাবগ্রস্তকে আহার দিতাম না, আমরা সমালোচকদের সাথে সমালোচনা করতাম। এবং আমরা প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম।[৭৪ আল-মুদ্দাসসির: ৩৯-৪৬]
আল্লাহ কাফেরকে খাদ্য-পানীয় ইত্যাদি যত নেয়ামত দিচ্ছেন সেসবের জন্যেও তাকে শাস্তি দিবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন:
“যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তারা পূর্বে যা ভক্ষণ করেছে, সে জন্য তাদের কোন গুনাহ নেই যখন ভবিষ্যতের জন্যে সংযত হয়েছে, ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করেছে। এরপর সংযত থাকে এবং ঈমান রাখে। এরপর সংযত থাকে এবং সৎকর্ম করে। আল্লাহ সৎকর্মীদেরকে ভালবাসেন।” [৫ আল-মায়েদা : ৯৩]
এই আয়াতের মানতুক (প্রত্যক্ষ ভাব) হচ্ছে- মুমিনগণ যা আহার করেছে সে ব্যাপারে তাদের গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। আর আয়াতের মাফহুম (পরোক্ষ ভাব) হচ্ছে-কাফেরেরা যা আহার করেছে সে ব্যাপারে তাদের গুনাহ হবে।” সমাপ্ত [মাজমূ ফাত্‌ওয়াশ-শাইখ ইবনে উছাইমীন (শাইখ উছাইমীনের ফতোয়াসমগ্র (২/ প্রশ্ন নং ১৬৪) ]
উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়- রমজান মাসের দিনের বেলায় কোন মুসলিম বা অমুসলিমকে খাবার পরিবেশন করা কোন মুসলিমের জন্য জায়েয নয়। কারণ কাফেররা শরিয়তের শাখাগত বিষয়সমূহ পালনের ব্যাপারে আদিষ্ট।
আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।

No comments:

Post a Comment