Tuesday, May 5, 2015

...এই বিদআত ৪৪৮ হিজরীতে সর্বপ্রথম বায়তুল মুকাদ্দাসে চালু হয় ।




শবে-বরাতের রাতে ১০০ রাকআত ছালাত সম্পর্কে উপমহাদেশের বিখ্যাত মুহাদ্দীছ, হানাফী মাযহাবের শ্রেষ্ঠ পাঁচজন আলেম-এর মধ্যে একজন, মিশকাত শরীফের খ্যাতনামা আরবী ভাষ্যকার মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী (রহঃ) বলেন,
"জুমআ ও ঈদায়নের ছালাতের চেয়ে গুরুত্ব দিয়ে 'ছালাতে আলফিয়াহ' নামে এই রাতে যে ছালাত আদায় করা হয় এবং এর স্বপক্ষে যেসব হাদীছ ও আছার বলা হয় তার সবই বানোয়াট ও মওযু অথবা যঈফ । এব্যাপারে (ইমাম গাযযালীর) এহইয়াউল উলুম ও (ইবনুল আরাবীর) 'কূতুল কুলূব' দেখে যেন কেউ ধোকা না খায় ।
...এই বিদআত ৪৪৮ হিজরীতে সর্বপ্রথম বায়তুল মুকাদ্দাসে চালু হয় । মসজিদের মূর্খ ইমামগন অন্যান্য ছালাতের সঙ্গে যুক্ত করে এই ছালাত চালু করে। এর মাধ্যমে তারা জনসাধারণকে একত্রিত করার ও পেট পুর্তি করার একটা ফন্দি এটেছিল মাত্র । এই বিদআতী ছালাতের ব্যাপক জনপ্রিয়তা দেখে নেককার-পরহেযগার ব্যক্তিগণ আল্লাহর গযবে যমীন ধ্বসে যাওয়ার ভয়ে শহর ছেড়ে জঙ্গলে পালিয়ে গিয়েছিলেন" ।
(মিরক্বাত, 'কিয়ামু শাহরে রামাযান' অধ্যায়, টীকা, ৩য় খন্ড, পৃঃ ১৯৭-৯৮)
ইমাম ইবনু তাইমিয়া (রহ) সকল প্রকার বিদআতের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বলেন,
“এ কথা জানা যে, যদি এ কাজটি শরীয়তসম্মত ও মুস্তাহাব হত যদ্‌দ্বারা আল্লাহ্‌ সাওয়াব দিয়ে থাকেন, তাহলে নবী করিম (সঃ) এ ব্যাপারে সবচেয়ে বেশী অবহিত থাকতেন এবং অবশ্যই তাঁর সাহাবীদেরকে তা জানাতেন, আর তাঁর সাহাবীরাও সে বিষয়ে অন্যদের চেয়েও বেশী অবহিত থাকতেন এবং পরবর্তী লোকদের চেয়েও এ ‘আমলে বেশী আগ্রহী হতেন।
কিন্তু যখন তারা এ প্রকার ‘আমলের দিকে কোন ভ্রুক্ষেপই করলেন না তাতে বোঝা গেল যে, তা নব উদ্ভাবিত এমন বিদআত যাকে তারা ইবাদাত, নৈকট্য ও আনুগত্য হিসেবে বিবেচনা করতেন না। অতএব এখন যারা একে ইবাদাত, নৈকট্য, সাওয়াবের কাজ ও আনুগত্য হিসাবে প্রদর্শন করছে তারা সাহাবাদের পথ ভিনড়ব অন্য পথ অনুসরণ করছেন এবং দ্বীনের মধ্যে এমন কিছুর প্রচলন করছেন যার অনুমতি আল্লাহ্‌ প্রদান করেননি”
উল্লেখ্য যে, এই রাতে (শবেবরাতে) মসজিদে গিয়ে জামা‘আত বদ্ধভাবে ছালাত আদায় করা, যিকর-আযকারে লিপ্ত হওয়া সম্পর্কে জানা যায় যে, শামের কিছু বিদ্বান এটা প্রথমে শুরু করেন। তারা এই রাতে সুন্দর পোষাক পরে,আতর-সুরমা লাগিয়ে মসজিদে গিয়ে রাত্রি জাগরণ করতে থাকেন। পরে বিষয়টি লোকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। মক্কা-মদীনার আলেমগণ এর তীব্র বিরোধিতা করেন। কিন্তু শামের বিদ্বানদের দেখাদেখি কিছু লোক এগুলো করতে শুরু করে। এইভাবে এটি জনসাধারণ্যে ব্যপ্তি লাভ করে।

No comments:

Post a Comment