Monday, May 18, 2015

ঈমানের ভয়ংকর ব্যাধি ক্রোধ।




ঈমানের ভয়ংকর ব্যাধি ক্রোধ।
------------------------------------------
মানবচরিত্রের একটি খারাপ দিক হলো ক্রোধ বা রাগ। ক্রোধ যখন মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তখন সেটা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ক্রোধান্বিত মানুষ বেসামাল হয়ে যায়, তখন অন্যের ওপর জুলুম করে। ক্রোধের কারণে মনের মধ্যে প্রতিশোধের আগুন জ্বলে ওঠে, তখন খুনখারাবি পর্যন্ত হয়ে যায়, ঘরসংসার ভেঙে যায়।
গীবত বা সমালোচনার পেছনেও মানুষের ক্রোধ কাজ করে, প্রতিপক্ষের উন্নতি সহ্য হয় না। শয়তান ক্রোধের ইন্ধন জোগায়, কারণ ক্রোধ আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। ক্রোধ নিবারণ অপরিহার্য, নচেৎ জীবনের সমূহ বিপর্যয় অনিবার্য।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্রোধকে ঈমানবিধ্বংসী বলে এই অপগুণ সম্পর্কে উম্মতদের সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়েছেন।
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, সিরকা যেভাবে মধুকে বিনাশ করে সেভাবে ক্রোধ ঈমানকে নষ্ট করে।
নিজেদের ঈমানদার হিসেবে দাবি করতে হলে নিজেকে মুমিন হিসেবে দেখতে চাইলে সর্বপ্রথম ক্রোধ থেকে দূরে থাকতে হবে। ক্রোধ সংবরণের সদগুণ আয়ত্ত করতে হবে।
একবার এক সাহাবি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে আবেদন জানালেন, 'হে আল্লাহর রসুল, আপনি আমাকে একটি ভালো কাজের নির্দেশ দিন।' রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, 'তুমি রাগ করবে না।' (বুখারি)।
ক্রোধ থেকে দূরে থাকার ব্যাপারে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কতটা তাগিদ দিয়েছেন উপরের হাদিস তারই প্রমাণ।
অনেকে ক্রোধ দেখানোকে নিজের শক্তিমত্তা প্রকাশের উপায় বলে ভাবেন। এ ভাবনায় রয়েছে মহা ভুল। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই ধারণাকে নাকচ করে দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তি শক্তিশালী নয়, যে কুস্তিতে অন্যকে পরাজিত করতে পারে। বরং প্রকৃত শক্তিশালী হচ্ছে সেই ব্যক্তি, যে ক্রোধের সময় নিজেকে সংযত রাখতে পারে।'
(বুখারি ও মুসলিম)।
মানুষ ক্রোধে আক্রান্ত হলে তার স্বাভাবিক কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তার এই বিপথগামীতায় শয়তান খুশি হয়। শয়তানকে খুশি করতে না চাইলে ক্রোধ সংবরণের চেষ্টা চালাতে হবে।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ক্রোধ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে, শয়তান আগুনের তৈরি। পানি আগুনকে ঠাণ্ডা করে। যদি কারও ক্রোধ হয় তবে তার উচিত অজু করে নেওয়া। (বুখারি ও মুসলিম)।
ক্রোধে আক্রান্ত হলে ব্যক্তি, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে গজব নেমে আসে। সাহাবি হজরত ইবনে উমর (রা.) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জানতে চাইলেন, এমন কোনো কাজ আছে কি যা আল্লাহর গজব থেকে রক্ষা করবে? তিনি বললেন, ‘তুমি রাগ দেখাবে না।’ (বুখারি)।

No comments:

Post a Comment