Sunday, October 11, 2015

প্রশ্ন : কাউকে কষ্ট দিলে তার গুনাহ কি আল্লাহ মাফ করবেন ?




____
উত্তর :
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
________
হক দুই প্রকারঃ
• হাক্কুল্লাহ [আল্লাহ-র প্রতি হক]
• হাক্কুল ইবাদ [বান্দার প্রতি হক]
_______
‪#‎হাক্কুল্লাহ‬:
আল্লাহর হক নষ্ট করলে আল্লাহ চাইলে শিরক ব্যতীত অন্য যেকোন গুনাহ ক্ষমা করতে পারেন বলে আমাদের বলেছেন ।
________
• নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে। এছাড়া যাকে ইচ্ছা, ক্ষমা করেন। যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে সুদূর ভ্রান্তিতে পতিত হয়। সূরা নিসা: ১১৬)
________
তবে এই আয়াতে উল্লেখিত গুনাহ হচ্ছে নামাজ, রোজা, হজ্জ, জাকাত ;যেগুলো আল্লাহ-র হক সেগুলো পালন না করার গুনাহ ।
_______
‪#‎হাক্কুল_ইবাদ‬:
বান্দার হক নষ্ট করার গুনাহ ক্ষমা করার এখতিয়ার আল্লাহ নিজ হাতে রাখেন-নি। যেমন, আমি যদি একজন-কে ধোঁকা দিয়ে ১ টি টাকা –ও নিয়ে নিই, কোন কথা বা গালির সাহায্যে মনে কষ্ট দেই, তবে একমাত্র সেই লোক (যার হক নষ্ট করলাম); সে বাদে আর কেউ ক্ষমা করতে পারবে না।
হাদীসে পাই-
‪#‎একবার‬ রাসুলূল্লাহ (সাঃ) তাঁর পাশে উপবিষ্ট সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ)কে বললেন-"তোমরা কি জানো,গরীব কে ?" সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) বললেন-আমাদের মধ্যে তো গরীব তাদেরকে বলা হয়,যাদের কাছে ধন-সম্পদ, টাকা-পয়সা না থাকে।
________
তখন রাসুলূল্লাহ (সাঃ)বললেন-"প্রকৃত পক্ষে আমার উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে গরীব সে,যে কিয়ামতের দিন নামায,রোযা,যাকাত, সবকিছু নিয়ে উঠবে, কিন্তু তার এ কর্মগুলো থাকবে যে, সে দুনিয়াতে কারো সাথে মন্দ আচরন করেছে, কারো নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কারো সম্পদ আত্মসাৎ করেছে, কাউকে আঘাত করেছে,কাউকে খুন করেছে ইত্যাদি,
________
তাই এর বিনিময়ে কিয়ামতের দিন তার কিছু নেকী একে দিবে,কিছু নেকী ওকে দিবে। এভাবে দিতে দিতে বান্দার হক আদায়ের পূর্বে যদি তার নেকী শেষ হয়ে যায়,তাহলে এই হকদারদের গুনাহ তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে।এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।"(মুসলিম শরীফ)
________
আল্লাহ আরো বলেন-
• যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। (সূরা আহযাব: 58)
________
অর্থাৎ কোন মানুষকে যেকোন ভাবে কষ্ট দিলে তা আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। ক্ষমা কেবল সেই ব্যক্তিই করতে পারবেন ।
যার হক নষ্ট করেছি তার কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে ।
এখন, আমি যদি মন থেকে অপরাধ স্বীকার করি, এত দেরিতে যখন (যার হক নষ্ট করলাম), সে মারা গেছেন; সেই ক্ষেত্রে তার উপযুক্ত উত্তরাধিকার এর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। [এই নজীর মক্কা বিজয়- এর পরে দেখা যায়]
________
এখন, আমি যদি মন থেকে অপরাধ স্বীকার করলাম, এত দেরিতে যখন (যার হক নষ্ট করলাম), সে মারা গেছেন বা পাওয়া যাচ্ছে না এবং তার উপযুক্ত কোন উত্তরাধিকার কেও পাওয়া যাচ্ছে না; তখন দেখতে হবে, অপরাধ এর ধরন কি? যদি, অপরাধটি আর্থিক ক্ষতি বিষয়ক হয়; তবে, সমপরিমাণ অর্থ “কোন সওয়াব এর প্রত্তাশা না করে” কোন ভাল কাজে দিয়ে দিতে হবে [যেমন, মসজিদ নির্মাণ]। এবং আল্লাহ-র কাছে মন থেকে ক্ষমা চাইতে হবে।
________
এখন, আমি যদি মন থেকে অপরাধ স্বীকার করলাম, এত দেরিতে যখন (যার হক নষ্ট করলাম), সে মারা গেছেন বা পাওয়া যাচ্ছে না এবং তার উপযুক্ত কোন উত্তরাধিকার কেও পাওয়া যাচ্ছে না; তখন, যদি, অপরাধটি ঐ লোককে অপমান করার মত কিছু হয়, যেমন ব্যাক্তিগত আক্রমণ (অহংকার, হিংশা, ঘৃণা) এর মত হয়; তখন [“কোন সওয়াব এর প্রত্তাশা না করে”] কাফফরা-স্বরূপ ১০ জন মিসকিনকে এক বেলা খাইয়ে দিয়ে, আল্লাহ-র কাছে মন থেকে ক্ষমা চাইতে হবে। [মনে রাখতে হবেঃ আল্লাহ মুখ দেখেন না; মন দেখেন]
________
উপরের কোন ভাবেই ক্ষমা না চাইলে , তাকে অবশ্যই “কিয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে শেষ বিচারের সময়” বিচারের মুখোমুখী হতেই হবে।
আশা করি উত্তরটা পেয়েছেন ।

No comments:

Post a Comment