Wednesday, August 23, 2017

যে সকল কারণে ও যারা স্থায়ীভাবে চিরকাল জাহান্নামে থাকবেঃ



Image may contain: fire



যে সকল কারণে ও যারা স্থায়ীভাবে চিরকাল জাহান্নামে থাকবেঃ 
/////////////////////////////////////////////////////
১। কুফরীর কারণে কাফেরগণ। ২। শির্ক-এর কারণে মুশরিকগণ। 
৩। নিফাকীর কারণে মুনাফিকগণ। ৪। ইসলাম ত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে গেলে। 
৫। রাসুলের আনুগত্যের পরিবর্তে অমান্য করলে। ৬। কোন মুসলিমকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার কারণে। ৭। সুদ ভক্ষণ ও সুদী কারবারের সাথে জড়িত থাকার কারণে।
নিম্নে দলীলসহ বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
১। কুফরীর কারণে কাফেরগনঃ
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَمَاتُوا وَهُمْ كُفَّارٌ أُولَٰئِكَ عَلَيْهِمْ لَعْنَةُ اللَّهِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ خَالِدِينَ فِيهَا ۖ لَا يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلَا هُمْ يُنْظَرُونَ
নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে এবং কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের উপর আল্লাহ, ফেরেশতাগণ ও সকল মানুষের লা’নত। তারা সেখানে স্থায়ী হবে। তাদের থেকে আযাব হালকা করা হবে না এবং তাদেরকে অবকাশও দেয়া হবে না। আল-বাক্বারাহ, ২/১৬১-১৬২
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَنْ تُغْنِيَ عَنْهُمْ أَمْوَالُهُمْ وَلَا أَوْلَادُهُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا ۖ وَأُولَٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۚ هُمْ فِيهَاخَالِدُونَ
নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে, তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহর নিকট কিছুমাত্র কাজে আসবে না; আর তারা আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে। আলে-ইমরান, ৩/১১৬
وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا أُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
আর যারা আমার আয়াতসমূহে কুফরী করেছে এবং মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তারাই আগুনের অধিবাসী, তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে। আল-বাকারাহ, ২/৩৯
وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا أُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ خَالِدِينَ فِيهَا وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
আর যারা আমার আয়াতসমূহে কুফরী করেছে এবং মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে আর তা কতই না নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল! আত্-তাগাবুন, ৬৪/১০
২। শির্ক-এর কারণে মুশরিকগণঃ
إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنْصَارٍ 
নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরীক করে, তার জন্য আল্লাহ অবশ্যই জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন এবং তার বাসস্থান হল জাহান্নাম আর যালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই। আল-মায়িদাহ, ৫/৭২
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَالْمُشْرِكِينَ فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا ۚ أُولَٰئِكَ هُمْ شَرُّ الْبَرِيَّةِ
নিশ্চয় কিতাবীদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে ও মুশরিকরা, জাহান্নামের আগুনে থাকবে স্থায়ীভাবে। ওরাই হল নিকৃষ্ট সৃষ্টি। আল-বাইয়্যিনাহ, ৯৮/৬
مَا كَانَ لِلْمُشْرِكِينَ أَنْ يَعْمُرُوا مَسَاجِدَ اللَّهِ شَاهِدِينَ عَلَىٰ أَنْفُسِهِمْ بِالْكُفْرِ ۚ أُولَٰئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ وَفِي النَّارِ هُمْخَالِدُونَ
মুশরিকদের অধিকার নেই যে, তারা আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করবে, নিজদের উপর কুফরীর সাক্ষ্য দেয়া অবস্থায়। এদেরই আমলসমূহ বরবাদ হয়েছে এবং আগুনেই তারা স্থায়ী হবে। তাওবা, ৯/১৭
৩। নিফাকীর কারণে মুনাফিকগণঃ
وَعَدَ اللَّهُ الْمُنَافِقِينَ وَالْمُنَافِقَاتِ وَالْكُفَّارَ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا هِيَ حَسْبُهُمْ وَلَعَنَهُمُ اللَّهُ وَلَهُمْ عَذَابٌ مُقِيمٌ
মুনাফেক পুরুষ ও মুনাফেক নারী আর কাফেরদেরকে আল্লাহ জাহান্নামের আগুনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, এটি তাদের জন্য যথেষ্ট আর তাদের জন্য আল্লাহর লা‘নত আর আছে স্থায়ী আযাব। আত্-তাওবাহ, ৯/৬৮
إِنَّ الْمُنَافِقِينَ فِي الدَّرْكِ الأسْفَلِ مِنَ النَّارِ وَلَنْ تَجِدَ لَهُمْ نَصِيرًا
নিশ্চয়ই মুনাফেকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে আর তুমি তাদের জন্য কখনও কোন সাহায্যকারী পাবে না। আন-নিসা, ৪/১৪৫
৪। ইসলাম ত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে গেলেঃ
وَمَنْ يَرْتَدِدْ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَيَمُتْ وَهُوَ كَافِرٌ فَأُولَئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ 
আর তোমাদের মধ্য থেকে যে তাঁর দীন থেকে ফিরে যাবে অতঃপর কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, ফলে ঐসব লোকদের তাদের আমলসমূহ দুনিয়া ও আখেরাতে নষ্ট হয়ে যাবে এবং তারাই আগুনের অধিবাসী হবে, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আল-বাকারাহ, ২/২১৭
كَيْفَ يَهْدِي اللَّهُ قَوْمًا كَفَرُوا بَعْدَ إِيمَانِهِمْ وَشَهِدُوا أَنَّ الرَّسُولَ حَقٌّ وَجَاءَهُمُ الْبَيِّنَاتُ وَاللَّهُ لا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ أُولَئِكَ جَزَاؤُهُمْ أَنَّ عَلَيْهِمْ لَعْنَةَ اللَّهِ وَالْمَلائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ خَالِدِينَ فِيهَا لا يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلا هُمْ يُنْظَرُونَ
কেমন করে আল্লাহ এমন লোকদেরকে হেদায়াত দিবেন যারা ঈমান আনার পরে কুফরী করে অথচ তারা রাসূলকে সত্য বলে সাক্ষ্য দিল আর তাদের নিকট স্পষ্ট দলীল-প্রমাণ আসার পরও কুফরী করে আর আল্লাহ যালেম লোকদেরকে হেদায়াত দেন না। ঐসব লোক, তাদের প্রতিদান হল যে, তাদের উপর আল্লাহ ও ফেরেশতাদের আর সকল মানুষের লা‘নত। তারা সেখানে (জাহান্নামে) চিরস্থায়ী হবে, তাদের আযাব শিথিল করা হবে না আর তাদেরকে অবকাশও দেয়া হবে না। আলে‘ইমরান, ৩/৮৬-৮৮
৫। রাসুলের আনুগত্যের পরিবর্তে অমান্য করলেঃ
وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَتَعَدَّ حُدُودَهُ يُدْخِلْهُ نَارًا خَالِدًا فِيهَا وَلَهُ عَذَابٌ مُهِينٌ 
আর যে আল্লাহর ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে, তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে, আর এটাই মহাসফলতা। আর যে আল্লাহ ও তার রাসূলকে অমান্য করবে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করবে, তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন, সেখানে সে চিরকাল থাকবে; আর তার জন্যই রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। আন-নিসা, ৪/১৩-১৪
إِلا بَلاغًا مِنَ اللَّهِ وَرِسَالاتِهِ وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنَّ لَهُ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا 
কেবলমাত্র আল্লাহর বাণী ও তাঁর রিসালত পৌঁছানোই তার দায়িত্ব আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করবে অবশ্যই তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন, তাতে তারা চিরকাল থাকবে। আল-জিন, ৭২/২৩
أَلَمْ يَعْلَمُوا أَنَّهُ مَنْ يُحَادِدِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَأَنَّ لَهُ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدًا فِيهَا ذَلِكَ الْخِزْيُ الْعَظِيمُ
তারা কি জানে না, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে, তবে তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন, সেখানে সে চিরস্থায়ী হবে? এটা মহালাঞ্জনা। আত্-তাওবাহ, ৯/৬৩
وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيرًا
আর যে রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, তার জন্য হিদায়াত স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও এবং মুমিনের পথের বিপরীত পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে ফেরাব, যেদিকে সে ফিরে যেতে চায় এবং তাকে প্রবেশ করাব জাহান্নামে আর তা কতো নিকৃষ্টতর আবাসস্থল। আন-নিসা, ৪/১১৫
৬। কোন মুসলিমকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার কারণে। আল্লাহ তা’আলা বলেন, 
وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا
আর যে কেহ ইচ্ছাকৃত কোন মুমিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার উপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে অভিশাপ করবেন এবং তার জন্য বিশাল আযাব প্রস্তুত করে রাখবেন। (আন-নিসা, ৪/৯৩)
৭। সুদ ভক্ষণ ও সুদী কারবারের সাথে জড়িত থাকার কারণেঃ
الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لا يَقُومُونَ إِلا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا فَمَنْ جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّهِ فَانْتَهَى فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ وَمَنْ عَادَ فَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ 
যারা সুদ ভক্ষণ করে, তারা শয়তানের স্পর্শে মোহাবিষ্ট ব্যক্তির দন্ডায়মান হওয়ার অনুরূপ ব্যতীত দন্ডায়মান হবে না; এটা এ জন্য যে তারা বলে, ক্রয়-বিক্রয় তো সুদের মতই। অথচ আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল করেছেন আর সুদকে হারাম করেছেন; সুতরাং যার কাছে তার রবের পক্ষ থেকে উপদেশ আসার ফলে সে বিরত হল, অতীতে যা হয়ে গেছে তা তারই জন্য, আর তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল, আর যারা পুনরাবৃত্তি করবে তারাই আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আল-বাকারাহ, ২/২৭৫
لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ وَكَاتِبَهُ وَشَاهِدَيْهِ وَقَالَ هُمْ سَوَاءٌ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত করেছেন, সুদ গ্রহীতার উপর, সুদদাতার উপর, এর লেখকের উপর ও এর সাক্ষীদ্বয়ের উপর এবং বলেছেন এরা অপরাধের ক্ষেত্রে সকলেই সমান। সহীহ মুসলিম: ৩৯৮৫

No comments:

Post a Comment