Wednesday, October 25, 2017

প্রশ্নঃ সালাতে সহি হাদিস অনুজায়ি কিভাবে সিজদা করতে হবে?





প্রশ্নঃ সালাতে সহি হাদিস অনুজায়ি কিভাবে সিজদা করতে হবে?
------------
সালাতে সিজদা করার নিয়ম:---

-রুকূ হ’তে উঠে ক্বওমার দো‘আ শেষে ‘আল্লা-হু আকবর’ বলে আল্লাহর নিকটে সিজদায় লুটিয়ে পড়বে এবং সিজদার দো‘আ সমূহ পাঠ করবে।
-নাক সহ কপাল, দু’হাত, দু’হাঁটু ও দু’পায়ের আংগুল সমূহের অগ্রভাগ সহ মোট ৭টি অঙ্গ মাটিতে লাগিয়ে সিজদা করবে।[ মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৮৮৭, ‘সিজদা ও তার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-১৪।]
-সিজদায় যাওয়ার সময় প্রথমে দু’হাত মাটিতে রাখবে। কেননা এ বিষয়ে আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত হাদীছটি ‘ছহীহ’।[আবুদাঊদ হা/৮৪০; ঐ, মিশকাত হা/৮৯৯ অনুচ্ছেদ-১৪।]
কিন্তু ওয়ায়েল বিন হুজ্র (রাঃ) বর্ণিত আগে হাঁটু রাখার হাদীছটি ‘যঈফ’।[ আবুদাঊদ হা/৮৩৮; ঐ, মিশকাত হা/৮৯৮ অনুচ্ছেদ-১৪, টীকা, পৃঃ ১/২৮২; মির‘আত ৩/২১৭-১৮; ইরওয়া হা/৩৫৭।]

-সিজদার সময় হাত দু’খানা ক্বিবলামুখী করবে ‘কেননা দুই হাতও সিজদা করে যেমন মুখমন্ডল সিজদা করে থাকে’। -[মুওয়াত্ত্বা, মিশকাত হা/৯০৫ ‘সিজদা ও তার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-১৪। ]
হাত ২ টি মাথার দু’পাশে কাঁধ বা কান বরাবর [ ফিক্বহুস্ সুন্নাহ ১/১২৩; আবুদাঊদ, তিরমিযী, নায়লুল আওত্বার ৩/১২১। ] মাটিতে স্বাভাবিকভাবে রাখবে [মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, বুখারী, মিশকাত হা/৭৯২ অনুচ্ছেদ-১০, হা/৮৮৮ অনুচ্ছেদ-১৪। ]

-এবং কনুই ও বগল ফাঁকা রাখবে। [ মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৮৯১ অনুচ্ছেদ-১৪।]-হাঁটু বা মাটিতে ঠেস দিবে না।[ আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৮০১।]
-সিজদায় দুই কনুই উঁচু রাখবে এবং কোনভাবেই দু’হাত কুকুরের মত মাটিতে বিছিয়ে দেওয়া যাবে না।[মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৮৮৮ ‘সিজদা ও তার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-১৪।]
-সিজদা এমন (লম্বা) হবে, যাতে বুকের নীচ দিয়ে একটা বকরীর বাচ্চা যাওয়ার মত ফাঁকা থাকে।[মুসলিম, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৮৯০।]
-সহজ হিসাবে প্রত্যেক মুছল্লী নিজ হাঁটু হ’তে নিজ হাতের দেড় হাত দূরে সিজদা দিলে ঠিক হ’তে পারে। সিজদা হ’তে উঠে বাম পায়ের পাতার উপরে বসবে এবং ডান পায়ের পাতা খাড়া রাখবে ও আঙ্গুলগুলি ক্বিবলামুখী রাখবে।[বুখারী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৭৯২, ৮০১।]
-অতঃপর বৈঠকের দো‘আ পাঠ শেষে তাকবীর বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে। অনেক মহিলা সিজদায় গিয়ে মাটিতে নিতম্ব রাখেন। এই মর্মে ‘মারাসীলে আবুদাঊদে’ বর্ণিত হাদীছটি নিতান্তই ‘যঈফ’।[ সুবুলুস সালাম শরহ বুলূগুল মারাম হা/২৮২-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য, ‘সিজদার অঙ্গ সমূহ’ অধ্যায়, ১/৩৭৩ পৃঃ ; যঈফুল জামে‘ হা/৬৪৩; সিলসিলা যঈফাহ হা/২৬৫২। ]
-সিজদা হ’ল দো‘আ কবুলের সর্বোত্তম সময়। যেমন আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীছে রাসূলূল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,‘বান্দা স্বীয় প্রভুর সর্বাধিক নিকটে পৌঁছে যায়, যখন সে সিজদায় রত হয়। অতএব তোমরা ঐ সময় বেশী বেশী প্রার্থনা কর’- [ মুসলিম, মিশকাত হা/৮৯৪, অনুচ্ছেদ-১৪, হা/৮৭৩, অনুচ্ছেদ-১৩; নায়ল ৩/১০৯; মির‘আত ১/৬৩৫; ঐ, ৩/২২১-২২।]
-রুকূ ও সিজদাতে কমপক্ষে তিনবার তাসবীহ পাঠ করবে।[ইবনু মাজাহ হা/৮৮৮; আহমাদ, আবুদাঊদ, প্রভৃতি, ছিফাত পৃঃ ১১৩, ১২৭।]
-দুই সিজদার মধ্যেকার সংক্ষিপ্ত বৈঠকে হাতের আঙ্গুলগুলি দুই হাঁটুর মাথার দিকে স্বাভাবিকভাবে ক্বিবলামুখী ছড়ানো থাকবে। [ নাসাঈ, ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১২৬। ] 
-দুই সিজদার মধ্যবর্তী বৈঠকের দো‘আ কমপক্ষে ২ বার বলবে ‘রবিবগ্ফিরলী’ (হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা কর)। [ ইবনু মাজাহ হা/৮৯৭; নাসাঈ, দারেমী, মিশকাত হা/৯০১, ‘ছালাত’ অধ্যায়-৪, ‘সিজদা ও উহার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-১৪। ]

-অতঃপর ২য় সিজদা করবে ও দো‘আ পড়বে।

No comments:

Post a Comment