Sunday, April 15, 2018

প্রশ্ন: বারবার বলছেন যে,শবে-বরাত উৎযাপন বিদ’আত ,তাহলে শবে-বরাত ইসলামে প্রবেশ করলো কখন ও কিভাবে?


No automatic alt text available.


প্রশ্ন: বারবার বলছেন যে,শবে-বরাত উৎযাপন বিদ’আত ,তাহলে শবে-বরাত ইসলামে প্রবেশ করলো কখন ও কিভাবে?
■উত্তরঃ
কুরআন ও সহীহ হাদীস সমূহে শবে-বরাত নামে পৃথক কোন ইবাদাতের কথা উল্লেখ নাই। রাসুল ﷺ এর দীর্ঘ ২৩ বছরের নবুওয়াতী জীবনে, এমনকি সাহাবীদের যুগেও এই ধরনের কোন দিবস পালনের কথা পাওয়া যায় না। 
.
ইতিহাস ঘাটলে জানা যায় যে, শবে-বরাত সর্বপ্রথম চালু হয়েছিলো ৪৪৮ হিজরীতে মসজিদুল আকসায়। তৎকালীন কিছু দুনিয়ালোভী ইমাম শবে রাতের রীতি তাদের মসজিদগুলোতে চালু করে। উদ্শ্যে ছিলো মসজিদগুলোতে বেশী লোক উপস্থিত করে নিজেদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করা। এ উদ্দেশ্যে তারা উক্ত রাতে উপস্থিত লোকদের মাঝে অনেক মিথ্যা ফজিলতপূর্ণ ওয়াজ ও জাল-জইফ হাদীস বয়ান করা শুরু করলো। ফলে অনেক অজ্ঞ লোক এই সমস্তু কথা শোনার জন্য মসজিদেগুলোতে জমা হতে থাকলো। অতঃপর এর সাথে আরও কতক বিদ’আতী আমল যুক্ত হয়ে গেলো।
.
সে সময়ের বাদশা ছিলেন ধর্মের ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। তিনি সর্বদা ঐ সকল ইমামদের কাছে রাখতেন, যারা সাধারণত মানুষের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয়। আর যেহেতু শবে-বরাতের মাধ্যমে ঐ সকল ইমামগণের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়ছিল, তাই দুনিয়ালোভী সকল ইমাম শবে-বরাতের পক্ষালম্বনকেই তাদের জনপ্রিয়তার মাপকাঠি বানিয়ে নেয়। আর বাদশার সমর্থন থাকায় শবে-বরাত উৎযাপন আরও আখাংখিত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
.
তবে সে যুগের হক্বপন্থি আলেমগণ এ নতুন বিদ’আতের বিরুদ্ধে নিজেদের সাধ্যানুযায়ী প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। আবার অনেকে আল্লাহর আযাবের ভয়ে জঙ্গলে পালিয়ে যান। কিন্তু সমাজের অজ্ঞ লোকেরা হক্বপন্থি আলেমদের কথা শ্রবণ না করে বিদ’আতীদের অনুসরণ করতে থাকে।
.
এ বিদ’আতটি পৃথিবীতে বেশীদিন টিকতে পারেনি। বিদ’আতটি সৃষ্টির পর মাত্র ৩৫২ বছর চালু ছিলো। জনপ্রিয়তা পাবার পরও এক সময় তা জেরুজালেম, সিরিয়া, মিশর, ইরাকসহ প্রায় সকল দেশেই আবার বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু বিচ্ছিন্নভাবে ইরানের শিয়াদের কিছু অঞ্চলে তা চালু রয়ে যায়। 
.
সেই সময় ভারতবর্ষে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়াতে লাগলো।ভারতের কিছু নওমুসলিমগণ ইরানের এই শবে-বরাতকে ভারতে আমদানী করে ফেললো। এই নওমুসলিমরা পূর্বে ছিলো হিন্দু। আর শবে-বরাতের রাতে মোমবাতি দেওয়া, আগরবাতি দেওয়া ছিলো হিন্দুদের দীপালি পূজার অনুরূপ। সুতরাং তারা এটিকে খুব সহজেই গ্রহণ করে নিলো। তারপর তা ধীরে ধীরে ভারতবর্ষের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। তাই তো আজ পর্যন্ত যার চার্চা ভারতীয় উপমহাদেশ ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানেই বেশি দেখা যায়।
[বিস্তারিত দেখুন মিরকাত ৪ খন্ড ৪৪৬-৪৪৭]

No comments:

Post a Comment