Friday, April 20, 2018

শবেবরাত_বনাম_হুযুগে_মুসলমান



Image may contain: text


🚫শবেবরাত_বনাম_হুযুগে_মুসলমান 🍞🍲
প্রথমেই শবেবরাত শব্দটি কুরআন এবং হাদীসে কোথাও খুজে পাওয়া যায় না । শবেবরাত ফার্সি শব্দ কাজেই কতটুকু বৈধ হতে পারে এটা । বিবেকের কাছে প্রশ্ন ?
নিসফ শা'বান শব্দটি হাদীসের পরিভাষায় পাওয়া যায় ।
মুহাদ্দিসগণ একমত যে, এ অর্থে বর্ণিত হাদীসগুলির সনদ অত্যন্ত দুর্বল অথবা জাল ও বানোয়াট ।
একটিমাত্র সহীহ হাদীস খুজে পাওয়া যায় । আর তা হলো, রাসূলুল্লাহ (স:) বলেন ; আল্লাহ তায়ালা মধ্য শাবানের রাতে তার সৃষ্টির প্রতি দৃকপাত করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষনকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন । ( ইবনু মাজাহ ১/৪৪৫;বাযযার, আল-মুসনাদ ১/১৫৭,২০৭,৭/১৮৬, বায়হাক্বী,শু'আবুল ঈমান,৩/৩৮১;ইবনু খুযায়মা,কিতাবুত তাওহীদ ১/৩২৫-৩২৬ )
এটাতে কোনো ধরনের আমল বর্ণিত হয়নি । শুধুমাত্র মুশরিক,হিংসা,বিদ্বেষ পরিহারের কথা বলা হয়েছে । অথচ এটা থেকে মানুষ বিমুখ হয়ে আছে । আর যেটা নাই সেটা নিয়ে লাফালাফি করে । এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার !!!
এত রাকাত নামায পড়তে হবে । অমুক অমুক সুরা দিয়ে অত সওয়াব হবে ইত্যাদি । সবই জাল হাদীস ।
শবেবরাত উপলক্ষে হালুয়া-রুটি খাওয়া । এটা স্পষ্টতই বেদ'আত । বা এটা করার মাঝে কোনো সওয়াব আছে বলে কল্পনা করা ভিত্তিহীন কুসংস্কার ছাড়া কিছুই নয় ।
শবেবরাত উপলক্ষে গোসল করলে মাথা থেকে যত ফোটা পানি পরবে ততগুনা ঝড়তে থাকবে বা তত নেকি হবে । এটাও জাল হাদীস ।
যে সকল দীনদার মানুষ পাপ থেকে আত্নরক্ষা করতে সচেষ্ট তাদেরকে জাহান্নামে নেওয়ার জন্য শয়তানের অস্ত্র তিনটি : (১) শিরক, (২) হিংসা-বিদ্বেষ ও (৩) বিদ'আত । এ সকল পাপগুলিকে শয়তান "ধর্মের " লেবাস পরিয়ে দেয়, ফলে দীনদার মানুষ না বুঝেই তার ক্ষপ্পরে পড়েন । তাই আসুন নিজে বাঁচি এবং অপরকে বাঁচাই ।
আমরা একে অপরকে ঘৃণা করছি বা তার সাথে হিংসা করছি । মতভেদীয় পাপ-পুণ্যের কারনে হিংসা-বিদ্বেষ ছড়াচ্ছি । মিলাদ,কিয়াম,মুনাজাত,যিকিরের পদ্ধতি,দীন প্রচার ও কায়েমের পদ্ধতি,পীর,কোনো একজন ইমাম, দল বা মতের কারনে আমরা একে অপরকে ঘৃণা করছি । অধিকাংশ ক্ষেত্রে সবই মুস্তাহাব-মাকরূহ পর্যায়ের । এ ধরনের বিষয় নিয়ে মুসলমান ভাইয়ের প্রতি হিংসা,বিদ্বেষ বা শত্রুভাব পোষণ করা যে শয়তানের ষড়যন্ত্র তা বুঝতে কি বেশি বুদ্ধির প্রয়োজন ?
শবেবরাত উপলক্ষে রাসূলুল্লাহ (স:) বা সাহাবীগণ কেউ কখনোই এ রাতে মসজিদে সমবেত হননি বা সমবেতভাবে কবর যিয়ারত করতে যাননি ।
এ রাতে আলোকসজ্জা করা, কবর বা গোরস্তানে আলোকসজ্জা,বাজি বা পটকা ফোটানো ইত্যাদি আরো গুরুতর অন্যায় বা নিষিদ্ধ ।
শবেবরাতে খুব বেশি নামাযী হয়ে গেছেন । কিন্তুু ফযরের নামাযের খবর নাই । এর থেকে ধোকাবাজি আর কি হতে পারে ?
আপনি যদি জীবনে শবেবরাতের নাম না শুনে থাকেন এবং ফরয ও ওয়াজিব ইবাদাত আদায় করে যান তবে আপনার নাজাতের আশা করা যায় ।
আর যদি জীবনে ১০০ টি শবেবরাত পরিপূর্ণ আবেগ নিয়ে ইবাদাত করে কাটায়, কিন্তুু একটি ফরয ইবাদাত ছেড়ে দেয় তবে তার নাজাতের আশা করা যায় না ।
আল্লাহর ফরয নির্দেশ অমান্য করে এক রাতে কাঁদা-কাটা করে তার কাছ থেকে ভাল ভাগ্য লিখিয়ে নেওয়ার মত চিন্তা কি কোনো পাগল ছাড়া কেউ করবে ?
ফরয ইলম,আকীদা,নামায,যাকাত,রোযা,হজ্ব,হালাল উপার্জন,সাংসারিক দায়িত্ব, পিতা-মাতা, সন্তান ও স্ত্রীর দায়িত্ব, সামাজিক দায়িত্ব, সৎকাজে আদেশ অসৎকাজ থেকে নিষেধ ইত্যাদি সকল ফরয ইবাদাত, যার ক্ষেত্রে যতটুকু প্রযোজ্য, পালন না করে শবেবরাতের সারারাত নফল ইবাদাত করা হলো দেহের ফরয সতর আবৃত না করে উলঙ্গ অবস্থায় টুপি-পাগড়ি পরে ফযীলত লাভের চেষ্টার মতই অবান্তর ও বাতুল কর্ম ।
আরেকটা মজার বিষয় হলো ভারতীয় উপমহাদেশ ছাড়া, অথাৎ ভারত,বাংলাদেশ,পাকিস্তান এ কয়েকটি রাষ্ট্রেই ঘরোয়া করে শবেবরাত পালন করে । আর বাকি মুসলিম রাষ্ট্রে শবেবরাত কি জিনিস তারা তা জানেনা । পালন তো দুরের কথা । তারা এটাকে হারাম মনে করে । এছাড়াও অন্যান্য যে সব রাষ্ট্র মুসলিমরা বসবাস করে তারা শবেবরাত পালন করেনা । তারা এটাকে হারাম জানে ।
ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এই তিনটি রাষ্ট্রে শিরক,বেদ'আতে ভরপুর । তাই জীবন চলার পথে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর অনুসারীদেরকে বন্ধু বানান । যাতে করে শিরক,বেদ'আত মুক্ত জীবন গড়ে তুলতে সাহায্য করে ।
তাই সমস্ত মুসলমান ভাই-বোনকে অনুরোধ করবো আমাদের দেশে প্রচলিত কিছু বই পাওয়া যায় যেগুলো পরিত্যাগ করা ঈমানি দায়িত্ব ।
যেমন : মোকছেদুল মোমিন,নিয়ামুল কোরআন,বেহেশতি জেওর, ফাযায়েলে আমল নামক বা ফাযায়েলে দিয়ে যত কিতাব আছে । সবগুলো পরিত্যাগ করুন । এগুলোর ভিতরে অসংখ্য ঈমান বিধ্বংসী কথা উল্লেখ করা আছে । এবং শিরক আর বেদ'আতী কথাবার্তায় ভরপুর । তাই এইসব পরিহার করুন ।

No comments:

Post a Comment