Sunday, November 25, 2018

রোজা রিমাইন্ডার



Image may contain: text


রোজা রিমাইন্ডার
আগামীকাল রোজা রাখছেন তো?
সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা
রাসূল সাঃ নিজে বৃহস্পতি ও সোমবার রোজা রাখতেন। তাই এদিন রোজা রাখা রাসূল সাঃ এর সুন্নত। হাদীসে এসেছে-
ﻋﻦ ﺃﺑﻰ ﻗﺘﺎﺩﺓ ﺍﻷﻧﺼﺎﺭﻯ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﺳﺌﻞ ﻋﻦ ﺻﻮﻡ ﺍﻻﺛﻨﻴﻦ ﻓﻘﺎﻝ ‏« ﻓﻴﻪ ﻭﻟﺪﺕ ﻭﻓﻴﻪ ﺃﻧﺰﻝ ﻋﻠﻰ
হযরত আবু কাতাদা আনসারী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ কে সোমবার দিনে রোযা রাখার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ এ দিন আমি জন্ম নিয়েছি, আর এদিনই আমার উপর [কুরআন] নাজিল হয়েছে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৮০৭, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-২১১৭, মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-২৯২৬, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২৫৫০, সুনানে আবী দাউদ, হাদীস নং-২৪২৮}
ﻋﻦ ﺭﺑﻴﻌﺔ ﺑﻦ ﺍﻟﻐﺎﺯ ﺃﻧﻪ ﺳﺄﻝ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﻋﻦ ﺻﻴﺎﻡ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻓﻘﺎﻟﺖ ﻛﺎﻥ ﻳﺘﺤﺮﻯ ﺻﻴﺎﻡ ﺍﻻﺛﻨﻴﻦ ﻭﺍﻟﺨﻤﻴﺲ
হযরত রাবীয়া বিন গাজ রহঃ হযরত আয়শা রাঃ এর কাছে রাসূল সাঃ এর রোযা রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি জবাবে বলেনঃ রাসূল সাঃ সোমবার ও বৃহস্পতিবারে রোযা রাখার ব্যাপারে খুবই মনোযোগী ছিলেন। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৭৩৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৬৪৩, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-২৪৯৬, মুসনাদে ইসহাক বিন রাহুয়া, হাদীস নং-১৬৬৫, মুসনাদুশ শামীন, হাদীস নং-৪৩৯, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৩১৫৪}
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ : ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﺗﻌﺮﺽ ﺍﻷﻋﻤﺎﻝ ﻳﻮﻡ ﺍﻹﺛﻨﻴﻦ ﻭﺍﻟﺨﻤﻴﺲ ﻓﺄﺣﺐ ﺃﻥ ﻳﻌﺮﺽ ﻋﻤﻠﻲ ﻭﺃﻧﺎ ﺻﺎﺋﻢ
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমল উপস্থাপন করা হয় [আল্লাহর কাছে]। আর আমার আমল উপস্থাপন করার সময় রোযারত থাকাকে পছন্দ করছি। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৭৪৭, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-২৬৬৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২১৭৫৩, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-২৬১৭, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩৫৪১, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-২৪১৯১}

বৃহস্পতি-সোমবার বান্দার আমল পেশ করা হয় :
মহান আল্লাহ তায়ালা তার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন মানুষকে। প্রত্যেক মানুষ যে ইবাদত-বন্দেগি করে, তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে লিখে রাখা হয়। এর জন্য নির্দিষ্ট ফেরেশতা নিযুক্ত রয়েছেন। কেয়ামতের দিন বান্দাকে সেগুলো দেখানো হবে এবং তার বিচার করা হবে। কিন্তু তারপরও বান্দার আমলগুলো দৈনিক, সাপ্তাহিক, বার্ষিক ভিত্তিতে আল্লাহর দরবারে উপস্থাপন করা হয়। বলতে গেলে, মানুষের প্রাতিষ্ঠানিক হিসাবপত্রের নিয়মমাফিক উপস্থাপন করা হয়।
দৈনন্দিন আমল আল্লাহর কাছে উপস্থাপনের ব্যাপারে হাদিসে বলা হয়েছে, দৈনন্দিন আমলের হিসাব দুই ভাগে পেশ করা হয়। দিনের আমল রাতের শুরুতে এবং রাতের আমল দিনের শুরুতে।’ (ফয়জুল কাদির, ইমাম মুনাভি, খণ্ড : ২, পৃষ্ঠা : ২৭৬)
সাপ্তাহিক আমল পেশ করা হয় সোমবার ও বৃহস্পতিবারে। হাদিসে এসেছে, এই দুই দিন রাসুল (সা.) রোজা রাখতেন। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা মতে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার (আল্লাহ তায়ালার কাছে) আমল পেশ করা হয়। তখন আল্লাহ তায়ালা তার মুমিন বান্দাদের ক্ষমা করে দেন। কিন্তু যে দুই ব্যক্তির পারস্পরিক হিংসা-দ্বেষ আছে, তাদের ক্ষমা করা হয় না।’ (মুসলিম, হাদিস নং : ২৫৬৫, তিরমিজি, হাদিস নং : ৭৪৭)
হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) সোমবার ও বৃহস্পতিবারে রোজার প্রতি অধিক যত্নশীল ছিলেন। (তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)
অন্য হাদিসের বর্ণনা মতে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা সোমবার ও বৃহস্পতিবার প্রত্যেক মুসলমানের গোনাহ ক্ষমা করেন। কিন্তু পরস্পর সম্পর্ক ছিন্নকারীর ব্যাপারে (আল্লাহ বলেন) নিজেদের মধ্যে সমঝোতার আগ পর্যন্ত এদের বাদ দাও।’ (ইবনে মাজাহ, তারগিব)
বান্দার আমল বার্ষিক ভিত্তিতে আল্লাহর কাছে পেশ করার ব্যাপারে কোরআন ও হাদিসে বিভিন্ন আলোচনা এসেছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘পৃথিবী তার পালনকর্তার আলোয় উদ্ভাসিত হবে, আমলনামা স্থাপন করা হবে, নবীগণ ও সাক্ষীদের আনা হবে এবং সকলের মধ্যে ন্যায়বিচার করা হবে-তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না।’ (সুরা যুমার, আয়াত নং : ৬৯)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি প্রত্যেক মানুষের কর্মকে তার গ্রীবালগ্ন করে রেখেছি। কেয়ামতের দিন একটি কিতাব বের করে তাকে দেখাবো, যা সে খোলা অবস্থায় পাবে। পাঠ কর তুমি তোমার কিতাব। আজ তোমার হিসাব গ্রহণের জন্যে তুমিই যথেষ্ট।’ (সুরা বনি ইসলাইল, আয়াত নং : ১৩-১৪)
উসামা ইবনে যায়দ (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে আছে, ‘রজব ও রমজানের মধ্যবর্তী মাস । কিন্তু মানুষ এ মাসের ব্যাপারে উদাসীন থাকে। এ মাসে আল্লাহর কাছে বান্দার আমল পেশ করা হয়। অতএব আমি চাই, আমার রোজাবস্থায় আল্লাহর কাছে আমার আমল পেশ করা হোক। (নাসাঈ)
রোজা আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। তাই ফরজ রোজা ছাড়াও নফল রোজা রাখা উত্তম। এতে বান্দার সঙ্গে আল্লাহর সম্পর্ক গভীর হয়।
বৃহস্পতি ও সোমবার যেহেতু বান্দার আমল আল্লাহর কাছে পৌছানো হয়; তাই সম্ভব হলে এই দুই দিন রোজা রাখায় সচেতন হওয়া উচিত।এছাড়া এটা একটা সুন্দর সুন্নত।

সাহরির শেষ সময়ঃ ৪:৫৭ (ঢাকা)
সবাই রোজা রাখুন। যাতে রোজা দার হিসেবে আপনার আমল নামা আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়।

No comments:

Post a Comment