Friday, June 5, 2015

মিথ্যা শপথকারী ঃ




আসসালামু আলাইকুম
মিথ্যা শপথকারী ঃ
মিথ্যা কসম একটি বড় পাপ, যার মাধ্যমে নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করা হয় এবং অন্যের ক্ষতিসাধন করা হয়। মিথ্যা কসমকারীর জন্য পরকাল নেই। মিথ্যা কসমকারীকে আল্লাহ পবিত্র করবেন না। আল্লাহ্ তার জন্য কষ্টদায়ক শাস্তি নির্ধারণ করে বলেন,
إِنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِيلاً أُوْلَئِكَ لاَ خَلاَقَ لَهُمْ فِي الْآخِرَةِ وَلاَ يُكَلِّمُهُمْ اللهُ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
(أل عمران : ৭৭)
‘যারা আল্লাহ্র নামে কৃত অংগীকার এবং প্রতিজ্ঞা সামান্য মূল্যে বিক্রয় করে, আখেরাতে তাদের কোন অংশ নেই। তাদের সাথে ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ্ কথা বলবেন না, তাদের প্রতি করুণার দৃষ্টিও দিবেন না। তাদেরকে পরিশুদ্ধও করবেন না। বস্তুত তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি’ (আলে ইমরান ৭৭)।
عَن ابن مسعود قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ حَلَفَ عَلَى يَمِينِ صَبْرٍ وَهُوَ فِيهَا فَاجِرٌ يَقْتَطِعُ بِهَا مَالَ امْرِئٍ مُسْلِمٍ لَقِيَ اللهَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَهُوَ عَلَيْهِ غَضْبَانُ
ইবনু মাসঊদ (রাযিঃ) বলেন, রাসূল (ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সেচ্ছায় মিথ্যা কসম করে অন্য মুসলমানের সম্পদ দখল করে, সে ক্বিয়ামাতের দিন এমন অবস্থায় আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাৎ করবে যে, আল্লাহ তার উপর অসন্তুষ্ট থাকবেন’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৭৫৯; বাংলা ৭ম খণ্ড, হা/৩৫৮৬ ‘মীমাংসা ও বিচার’ অধ্যায়)।
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ اقْتَطَعَ حَقَّ امْرِئٍ مُسْلِمٍ بِيَمِينِهِ فَقَدْ أَوْجَبَ اللهُ لَهُ النَّارَ وَحَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ وَإِنْ كَانَ شَيْئًا يَسِيرًا يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ وَإِنْ قَضِيبًا مِنْ أَرَاكٍ
আবূ উমামাহ (রাযিঃ) বলেন, রাসূল (ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কসমের মাধ্যমে অন্য মুসলমানকে তার হক থেকে বঞ্চিত করে, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম নির্ধারণ করেছেন এবং জান্নাত হারাম করেছেন। একজন ছাহাবী বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! অল্প বস্তুর জন্য হলেও? অর্থাৎ খুব কম হলেও রাসূল (ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘আরাক গাছের ডালের ব্যাপারে কসম খেলেও’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৭৬০)।
عَنْ أَبِي ذَرٍّ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمْ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ قَالَ أَبُو ذَرٍّ خَابُوا وَخَسِرُوا مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ الْمُسْبِلُ وَالْمَنَّانُ وَالْمُنَفِّقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ
আবূ যার (রাযিঃ) বলেন, রাসূল (ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তিন শ্রেণীর লোক রয়েছে, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের দিকে করুণার দৃষ্টি দিবেন না। তাদের পরিশুদ্ধ করবেন না; বরং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আবূ যার (রাযিঃ) বললেন, তারা খর্ব হল, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হল, তারা কারা? হে আল্লাহ্র রাসূল! তিনি বললেন, (১) গিঁটের নিচে কাপড় পরিধানকারী পুরুষ (২) অনুগ্রহ করে প্রকাশকারী অর্থাৎ খোঁটাদানকারী এবং (৩) মিথ্যা কসমে পণ্য বিক্রিকারী। (মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৯৫; বাংলা-৬ষ্ট খণ্ড, হা/২৬৭৩ ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়)
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِيَّاكُمْ وَكَثْرَةَ الْحَلِّفِ فِي الْبَيْعِ فَإِنَّهُ يُنَفِّقُ ثُمَّ يَمْحَقُ
ক্বতাদা (রাযিঃ) বলেন, রাসূল (ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমরা ক্রয়-বিক্রয়ে মিথ্যা কসম করা হতে সাবধান থাক। কেননা নিশ্চয়ই মিথ্যা কসমে সম্পদ বেশি করে কিন্তু পরে আবার ধ্বংস করে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৯৩)।
عَنْ هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ الْحَلِفُ مَنْفَقَةٌ لِلسِّلْعَةِ مَمْحَقَةٌ لِلبَرَكَةِ
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) বলেন, ‘আমি রাসূল (ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, মিথ্যা কসমে পন্য বেশি করে কিন্তু বরকত ধ্বংস করে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৯৪)।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الْكَبَائِرُ الْإِشْرَاكُ بِاللهِ وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ وَقَتْلُ النَّفْسِ وَالْيَمِينُ الْغَمُوسُ
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিঃ) বলেন, রাসূল (ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘বড় পাপ হচ্ছে আল্লাহ্র সাথে শিরক করা; পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা ও জেনেশুনে মিথ্যা কসম করা’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫০)। উল্লেখ্য আল্লাহ্র নাম ব্যতীত যে কোন বস্তুর কসম করা নিষেধ।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ اللهَ يَنْهَاكُمْ أَنْ تَحْلِفُوا بِآبَائِكُمْ مَنْ كَانَ حَالِفًا فَلْيَحْلِفْ بِاللهِ أَوْ لِيَصْمُتْ
ইবনু ওমর (রাযিঃ) বলেন, রাসূল (ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাদেরকে তোমাদের পিতামহের নামে শপথ করতে নিষেধ করেন। কেউ কসম করতে চাইলে সে যেন আল্লাহ্র নামে কসম করে অথবা চুপ থাকে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৪০ বাংলা ২য় খণ্ড হা/৩১৩)।
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ تَحْلِفُوا بِالطَّوَاغِي وَلاَ بِآبَائِكُمْ
আব্দুর রহমান ইবনু সামুরা (রাযিঃ) বলেন, রাসূল (ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমরা মূর্তির নামে কসম করনা এবং তোমাদের পিতার নামেও কসম করো না’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৪০৮; বাংলা-৭ম খণ্ড,হা/৩২৬২‘শপথ ও মানত’ অধ্যায়)।

No comments:

Post a Comment