Wednesday, January 20, 2016

কোন্ ‘আমালে আদাম (‘আ.)-এর তাওবাহ কবূল হল ?




‘‘হযরত ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, হুজুরে পাক (ছঃ) বলেন, যখন হজরত আদম (আঃ) হইতে কিছুটা পদস্খলন হইয়া গেল যাহার দরুণ তিনি বেহেশত হইতে দুনিয়াতে প্রেরিত হইলেন, তখন তিনি সব সময় কান্নাকাটি ও এস্তেগফার করিতে থাকেন। একদিন তিনি আছমানের দিকে মুখ উঠাইয়া আরজ করিলেন হে আল্লাহ! মোহাম্মাদ (ছঃ) এর উছিলায় আমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি। অহী নাজেল হইল, মোহাম্মদ (ছঃ) কে? যাহার উছিলায় তুমি ক্ষমা চাহিতেছ? হজরত আদম (আঃ) বলিলেন- যখন আপনি আমাকে সৃষ্টি করেন তখন আমি আরশের উপর লিখিত দেখিয়াছিলাম ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ মোহাম্মাদুর রাছুলুল্লাহ’, তখনই আমি বুঝিতে পারিয়াছিলাম মোহাম্মদ (ছঃ) ইহতে অধিক মর্যাদাশীল আর কেহই হইবে না, যেহেতু আপনি তাহার নাম নিজের নামের সঙ্গে রাখিয়াছেন। অহী হইল হে আদম! তিনি আখেরী নবী এবং তিনি তোমার আওলাদভূক্ত হইবেন অথচ তিনি না হইলে তোমাকেও পায়দা করিতাম না’’-। (ফাজায়েলে জিকির ৩৬৯ পৃঃ বাংলা)
উক্ত হাদীসটি লেখার পর শায়খ যাকারিয়া আরবীতে মন্তব্য লিখেছেন, (হানাফী জগতের বিখ্যাত মুহাদ্দিস) আল্লামা মোল্লা আলী কারী তার আল-মাউযুআতুল কাবীর গ্রন্থে বলেন, এ হাদীসটি জাল। অথচ শায়খ যাকারিয়া উর্দু এবং বাংলা অনুবাদক সাখাওয়াতউল্লাহ লেখেননি যে, এ হাদীসটি জাল হাদীসটি হাকিম আল-মুসতাদরাক (২/৬১৫) গ্রন্থে, ইবনু আসাকির ‘তারীখ’ (২/৩২৩/২) গ্রন্থে এবং ইমাম বায়হাক্বী ‘দালায়িলুন নবুওয়াত’ (৫/৪৮৮) গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি জাল। হাফিয যাহাবী ‘তালখীসুল মুসতাদরাক’ এবং ‘মিজানুল ই’তিদাল’ গ্রন্থে হাদীসটিকে জাল এবং বাতিল বলেছেন। ইমাম বাইহাক্বী এ হাদীসের এক রাবীকে ‘দুর্বল’ সাব্যস্ত করেছেন। হাফিয ইবনু কাসীর ‘তারীখ’ গ্রন্থে এবং হাফিয ইবনু হাজার ‘লিসান’ গ্রন্থে একই কথা বলেছেন। মুহাদ্দিস হায়সামা ‘মাজমাউযু যাওয়ায়িদ’ (৫/২৫৩) গ্রন্থে বলেছেন, ইমাম তাবারানী ‘আউসাত’ এবং ‘সাগীর’ গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন কিন্তু তথায় দুর্বল রাবী আছে। (গৃহীত আত্ তাহরীক মে-২০০৫)
পাঠক এখন বলুন, একজন মুহাদ্দিস কর্তৃক জাল হাদীস বর্ণনা করে অনুবাদ না করা ইমাম মুসলিমের নীতি অনুযায়ী মুসলিম উম্মাকে ধোঁকা দেয়া নয় কি?
ধৈর্যসহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। জাযাকাল্লাহু খাইরান!

No comments:

Post a Comment